বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:সাধারণ বাঙালির কাছে ন্যায্য দামে সাধের ইলিশ পৌঁছে দিতে উদ্যোগ নিল পশ্চিমবাংলার সরকার। ‘সুফল বাংলা’র মাধ্যমে সেই রুপোলি শস্যকে এবার তুলে দেওয়া হবে রাজ্যবাসীর হাতে। সরকারি ‘সুফল বাংলা’র স্টলে ন্যায্য মূল্যে সবজি, ফল ও মাছ বিক্রি হয়। কিন্তু সেই মাছের তালিকায় এতদিন ছিল না ইলিশ। এবার পাওয়া যাবে সেই ইলিশ মাছও৷
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে মার্চ থেকে টানা পাঁচ মাস ধরে চলছে লকডাউন। ফলে পরিবেশে দূষণ অনেকটাই কমেছে। নদীগুলিও বেশ পরিষ্কার। বৃষ্টিও খুব একটা খারাপ হয়নি। বা এখনও হচ্ছে না। তাই এই বর্ষায় ভালো ইলিশ বাজারে আসবে বলে ভেবেছিলেন আপামর বাঙালি। কিন্তু অগস্ট মাস শেষ হতে চললেও বাজারগুলিতে কিন্তু তেমন একটা ইলিশ চোখে পড়ছে না। যে–টুকু ইলিশ দেখা যাচ্ছে, তার দামও আকাশছোঁয়া। ১৯ অগস্ট পশ্চিমবাংলায় ঢুকেছে বাংলাদেশের ইলিশ। তবু দামে তেমন একটা হেরফের হয়নি। বাজারগুলিতে এক থেকে দেড় কেজির ইলিশের দাম ভারতীয় মুদ্রায় দেড় থেকে দু’হাজার টাকা। ফলে সাধারণ বাঙালিকে এখনও ইলিশ থেকে মুখ ফিরিয়েই থাকতে হচ্ছে। হেঁশেলে পাওয়া যাচ্ছে না ইলিশ রাঁধার সুস্বাদু গন্ধ।
ফলে বাজার থেকে হতাশ হয়েই ফিরতে হচ্ছে বাঙালিকে। তাঁরা এখন চিন্তায় রয়েছেন, তবে কি ইলিশহীনই কি কাটবে এবারেরও বর্ষা? গত বছর বর্ষার ইলিশ সে ভাবে পাত ভরায়নি বাঙালির। তবে সকলে এখনই যে আশা ছেড়ে দিয়েছেন, তা কিন্তু নয়। অনেকেই ভাবছেন, এই বর্ষাতেই হয়তো শেষ পর্যন্ত ইলিশের ঢল নামবে বাজারে। কারণ, এখন মৌসুমী বায়ুর সৌজন্যে আসা বর্ষা এবং নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টি ভালোই হচ্ছে। এরই মধ্যে সুখবর জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার। ‘সুফল বাংলা’র স্টলগুলিতেই এবার সাধ্যের মধ্যে পাওয়া যাবে ইলিশ মাছ। আর যেহেতু ‘সুফল বাংলা’ সরকারি দোকান, তাই মাছের দাম নির্ধারণে ক্রেতাদের সামর্থ্যের কথাও বিবেচনা করা হবে।
সত্যিই তাই, জানা গিয়েছে, সাধারণ বাঙালির কথা ভেবে রাজ্য সরকার সাধ্যের মধ্যেই রাখবে সেই ইলিশের দাম। সেইজন্য বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ইলিশ কেনার জন্য আলোচনা করছিল রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, সেই আলোচনা পর্ব মিটেছে। ইতিমধ্যে বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে ইলিশ কেনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে রাজ্য সরকার। সরকারের তরফে এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সারা রাজ্যে ৩০০–রও বেশি স্টল রয়েছে সুফল বাংলার। প্রত্যেকটি স্টলেই ইলিশ বিক্রি হবে। সেই কাজ করা যাতে সম্ভব হয়, সেই চেষ্টাই এখন রাজ্য সরকার করছে। আশা করা যায়, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ‘সুফল বাংলা’র স্টলগুলি ভরে উঠবে ইলিশে।